ভাই বোন চটি কেন লোক এত ভালবাসে বাংলা চটি গল্প পড়তে? এই প্রশ্নটা যতটাই সরল ঠিক ততটাই জটিল । অদিরস পান করার প্রকার ও ইচ্চা ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভরশীল ।
কে কেমন ভাবে আদিরসাস্বাদন করবে তা তার চরিত্রের উপর নির্ভর করছে বা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে ।
মানুষ মাত্রই আনন্দলোভী কিন্তু সবার আনন্দ নেওয়ার পথ এক নয় । বাংলা চটি গল্পের ভেতর এক অপার আনন্দ বা সুখ আছে যা প্রায় প্রতিটি মানুষকে আকর্ষণ করে । বিশেষ করে কিশোর কিশোরী আর যুবক যুবতীদের । চটি গল্প মনকে মিলনের জন্য ব্যকুল করে শরীরকে করে কামাক্ত ।
যাদের পক্ষে বর্তমানে বাস্তবিক মিলন সম্ভব নয় বা বাস্তবিক মিলনের ভিডিও দেখাও সম্ভব নয় বিশেষ করে তারাই চটি গল্পের প্রকৃত পাঠক ।
( চটি গল্পের কুপ্রভাব নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিলাম,
আরো পড়ুনঃ সানি লিওনের এক্সপ্রেস ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন – এখনি দেখুন
এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, যদি উত্তেজক গল্প পাঠকালে প্রতি নিয়ত আপনার মনে পাপবোধ কাজ করে তাহলে আপনার উচিৎ ভাই বোন চটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া । নতুবা এই পাপবোধের জন্ম আপনার ভবিষ্যৎ নষ্ট করবে ভাই বোন চটি । তখন বাস্তবিক মিলনকেও আপনার পাপ বলেই মনে হবে ।
.ভাই বোন চটি Why people more interested in Bangla Choti golpo
দেখুন আপনিও হয়তো জানেন ভারত সহ বেশ কয়েকটি দেশ উত্তেজক ভিডিও ভাই বোন চটি দেখা আইনত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে । কিন্তু আইনত নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবিক ততটা কার্যকর হয় নি এই আইন ।
বরঙ উলটে বহু কমবয়সী আকৃষ্ট হয়েছে গোপন ভিডিওর প্রতি ভাই বোন চটি ।
ভাই বোন চটি তবে বেশিরভাগ বড় বড় সাইট ভারতে সত্যিই বন্ধ হয়ে গেছে । আর বেশিরভাগ ছোট সাইট ভিডিও দেখায় না, ওদের ভিডিও নেই । তাই এক পেজ থেকে আরেক পেজ ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ায় নিজেদের আয়ের ধান্দায় ভাই বোন চটি ।
.এর ফলে বহু পাঠক চটি গল্প পড়তে শুরু করেছে । দিন দিন হু হু করে বাড়ছে চটি গল্পের পাঠক । এর সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আমার মনে হয় ।
বর্তমান সময় আর সমাজ আজকের ছেলেমেয়েদের Choti golpo র দিকে ঠেলছে । বর্তমান সিনেমাওগুলো দেখুন, ওখানেও শরীর দেখানো নিয়ে মাতামাতি । বর্তমান প্রেমের উপন্যাস বা গল্পগুলোও প্রাণহীন ।
.লোক কিছুটা স্বেচ্ছায় বাকিটা ইচ্চায় চটি গলায় পরছে ।
মা মামি বোন কাকিমা কে নিয়ে চটি. হায় রে বাঙালি!!!! জানি না এই গল্প কতটা সর্বনাশ করবে । চটি গল্প প্রেমের হলে তেমন আপত্তির কিছুই ছিল না ।
তোমাকে বলছি
তুমি লিখেছ যে, র্যাঙ্ক ধরে রাখার একটা চাপ তোমার ওপর আছে । তার মানে, তুমি তোমার ক্লাসে বেশ ওপরের দিকেরই ছাত্র । গল্প-উপন্যাস পড়ে, পড়ার বইয়ের বাইরে আরও পাঁচ রকম বই পড়েও যখন ভাল রেজাল্টই করো, তা হলে এত ঘাবড়াচ্ছ কেন?
. তোমার চিঠিটা পড়ে বেশ ভাল লাগল । প্রথম কথা হল, তুমি বেশ গুছিয়ে লিখতে পারো । দ্বিতীয়ত, তোমার‘সমস্যা’কী, সে বিষয়ে তোমার একটা স্পষ্ট ধারণা আছে । প্রথমেই বলি, এই গুছিয়ে ভাবতে পারা, বলতে পারা একটা গুণ ।
লেখাপড়ার ক্ষেত্রে এই গুণটা খুবই কাজে লাগে, অল্প সময়ের মধ্যেই যে কোনও বিষয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়ে যায় । ফলে অন্যদের তুলনায় সম্ভবত তোমার পড়া তৈরি করতে কম সময় লাগে । মানে, তোমার হাতে একটু বাড়তি সময় থাকেই । সে সময়টা তুমি কী ভাবে ব্যবহার করবে, সেটা তোমার ব্যাপার । গল্প-উপন্যাস পড়ে বাড়তি সময় ব্যয় করাটা, সাধারণ ভাবে বললে, খুবই ভাল ব্যবহার ।
. আমাদের মনটা আসলে একটা বেলুনের মতো । যদি তাতে হাওয়া না ভরো, সেটা চুপসে ছোট্ট হয়ে থাকে । কিন্তু যত হাওয়া ভরবে, বেলুনটা ততই বড় হতে থাকবে । এটাকে মনের প্রসার বলে । সাহিত্যপাঠে মনের যতখানি প্রসার হয়, তেমনটা আর কিছুতে নয় । যত পড়বে, দেখবে ততই তোমার চিন্তাভাবনা প্রসারিত হচ্ছে, বড় করে ভাবতে পারছ, নতুন নতুন বিষয়ে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে । আর পাঁচ জনের চেয়ে অন্য ভাবে ভাবতে পারছ ।
তোমার স্কুলের পড়াশোনার ওপরও এর প্রত্যক্ষ সুপ্রভাব পড়বে । কিন্তু তার চেয়েও বেশি এর পরোক্ষ প্রভাব । আমি এক অসাধারণ পণ্ডিত মানুষকে চিনি । ইতিহাসে তাঁর অগাধ জ্ঞান । তাঁর ইতিহাস পড়ার ইচ্ছে কিন্তু স্কুলের বই পড়ে হয়নি, হয়েছিল শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক উপন্যাস পড়ে । সেই উপন্যাস কি সত্যিই অক্ষরে অক্ষরে ইতিহাস মেনে লেখা? মোটেই নয় । কিন্তু, মনের মধ্যে ইতিহাসের সুর বেঁধে দিয়েছিল সেই উপন্যাস । সাহিত্য না পড়লে এই সুরটা তৈরিই হত না ।
.তোমায় হয়তো এই কথাগুলো না বললেও চলত, কারণ তুমি যখন পড়তে ভালবাসো, তখন তুমি নিজেই জানো যে কী ভাবে এই পড়া তোমায় সাহায্য করছে । কিন্তু, তোমার এখন একটা অন্য সমস্যা । তোমার চিঠি পড়ে মনে হচ্ছে, তুমিও একটা দ্বিধায় আছো এই গল্পের বইয়ের প্রতি আকর্ষণ তোমার লেখাপড়ার ক্ষতি করবে না তো? তুমি যেমন কেরিয়ার চাও, সেটার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তো? আশঙ্কাটা যে একেবারে অমূলক, তা বলব না । গল্পের বই যাদের টানে, তারাই জানে যে সেই টান কত জোরদার । কাজেই, তোমায় লেখাপড়া আর বাইরের বই পড়া এই দুটোর মধ্যে একটা ভারসাম্য আনতে হবে ।
সেটা করার অনেক উপায় হতে পারে । আমি একটা পরামর্শ দিই । ধরো, একটা উপন্যাস পড়ছ । সেটা পড়ার পর পরের উপন্যাসটা তখনই ধরে ফেলো না । দিন তিনেক অপেক্ষা করো । সেই ফাঁকে শুধু লেখাপড়া করো । নিজের জন্য টার্গেট ঠিক করে নাও । নিজেকে বলো, ইতিহাসের দুটো অধ্যায়, অঙ্কের দুটো অধ্যায় শেষ করার পর, তার উত্তর তৈরি করার পর আবার পরের উপন্যাসটা ধরব । নিজেকে ফাঁকি দিও না । পড়া তৈরি হওয়ার পরেই আবার গল্পের বইয়ে হাত দাও । যেহেতু গল্পের বই পড়ার জন্য তোমার তীব্র ইচ্ছে হবে, সেই ইচ্ছেটাই তোমার লেখাপড়াকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে ।
. নিজের জন্য পুরস্কার আর শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারলে, আর সেই ব্যবস্থা মেনে চলতে পারলে দারুণ হয় । ধরো তুমি ঠিক করলে, সামনের পরীক্ষায় অঙ্কে অন্তত ৯৫ পেতেই হবে । যদি পাও, তা হলে নিজেকে একটা বাড়তি বই পড়ার সুযোগ দেবে । আর যদি না পাও, তবে গল্পের বইয়ের তালিকা থেকে একটা বই কাটা যাবে সেই সময়টা পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করবে । নিজেকে মোটিভেট করতে পারা খুব জরুরি । এটা যে যেমন ভাবে পারে, করে । তুমি গল্পের বই পড়াটাকেই নিজের মোটিভেশন হিসেবে ব্যবহার করতে পারো ।
. তবে, পড়ার অভ্যাসটা ছেড়ো না যেন । আজকের পড়া তোমার ভবিষ্যতে প্রচুর কাজে লাগবে । তোমার চারপাশের লোকজনের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবে তুমি ।
কিছুক্ষণ
-“ আমাকে জানালার পাশের সীটটা দেয়া যাবে?”
আমি বই পড়ছিলাম । মাথা তুলে দেখলাম মেয়েটিকে । আমাকে আন্তরিক ভঙ্গিতে প্রশ্নটি করে এখনও জোর করে মুখে এক টুকরো হাসি ধরে রেখেছে মেয়েটি । আমি বললাম— “ অবশ্যই দেয়া যাবে । সুন্দরী মেয়েদের জানালার পাশের সীট ছেড়ে দেয়ার নিয়ম আছে”
-“ তাই? তা এই নিয়ম বুঝি এখন বানালেন?” মেয়েটি লাগেজ টেনে নিয়ে জানালার পাশের সীটে বসে পরলো । আমি বললাম-“ হ্যাঁ । সুন্দরী মেয়েদের জন্য নতুন নতুন নিয়ম বানানোর ও নিয়ম আছে”
এবারে মেয়েটি হেসে ফেললো । ট্রেনের ঝকঝক শব্দে সেই হাসির শব্দ মৃদু শোনালো । মেয়েটি লাজুক ভঙ্গিতে বলল-“ দেখুন, নিয়ম বানান আর যাই করুন, ফোন নাম্বার, ফেইসবুক আইডি এইসব চাওয়ার চেষ্টা করবেন না ।”
. -“ না ওসবে আমার আগ্রহ নেই । তাছাড়া সুন্দরী মেয়েদের সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ ও হতে নেই । তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হয় ।”
-“ কিন্তু আপনি তো আমার পাশের সীটেই বসে আছেন । দূরত্ব থাকছে কোথায়?”
-“ পাশে বসে আছি কিন্তু সহস্র মাইল ব্যবধান আছে মেম ।”
আমি হেসে বললাম । আমাকে বেশিক্ষণ মেয়েটির পাশে বসতে হলো না । পরের স্টেশনে একটি লোক নেমে যাওয়াতে তার সীটে আমি বসে পরলাম । এখন আমরা মুখোমুখি বসে আছি । দুইজনই জানালের পাশে । চোখে চোখ পরতেই মেয়েটি বলল-“ আচ্ছা আপনার এমনটা কেন মনে হলো যে সুন্দরী মেয়েদের থেকে দূরে থাকতে হবে । এটাও কি আপনার বানানো কোন নিয়ম?”
আমি বললাম-“ সুন্দরের খুব বেশি কাছে যেতে নেই । একবার কাছ থেকে সৌন্দর্য দেখে ফেললে দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে ।”
-“ তাই নাকি? এমন তো শুনিনি কখনও ।”
-“ তাছাড়া আরও একটা বেপার ঘটতে পারে । দূর থেকে যা সুন্দর দেখায় কাছে চলে গেলে সেই সৌন্দর্য অনেক সময় চোখে পরে না । দূর থেকে যা খুব বেশি আকষর্ণীয় কাছ থেকে দেখলে তাই খুব সাদামাটা”
-“ আপনি বলতে চাচ্ছেন আমি দূর থেকে সুন্দর । কাছ থেকে দেখতে পঁচা?”
-“ আমি সেটা কখন বললাম”
-“ এই যে মিস্টার আপনি বই পড়ছিলেন পড়ুন । আমার সাথে গল্প জমানোর চেষ্টা করছেন আপনি । ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছেন । আগেই বলে দিচ্ছি ভুলেও আমার সাথে প্রেম করার চেষ্টা করবেন না । একদমই না ।?
-“ দেখুন আপনি ভুল পথে চিন্তা এগুচ্ছেন । আমার মোটেও এরকম ইচ্ছে নেই । তাছাড়া আমি সুন্দরী কোন মেয়ের প্রেমে পরতে চাই না । যদি কখনও প্রেম করি অল্প সুন্দরী মেয়ে বেছে নেবো ।”
-“ তাই নাকি? ইন্টারেস্টিং তো । এরকম ইচ্ছের কারণ?”
-“ কারণ খুব সুন্দরী কারও প্রেমে একবার পরে গেলে আর উঠে দাঁড়াতে পারবো না । পরেই থাকবো ।”
এই সামান্য কথায় মেয়েটি মনে হচ্ছে অনেক বেশি মজা পেল । শব্দ করে হাসছে মেয়েটি । হাসিটা অন্য রকম । শিশুদের হাসির মতো নির্মল যা আশেপাশের সবকিছুতেই মুগ্ধতা ছড়ায় । সেই হাসি বড় বেশি সংক্রামক । আমাকেও হাসতে হলো । আমি মেনে নিতে বাধ্য হলাম মেয়েটির হাসি সুন্দর । অল্প সুন্দর না । মন ভালো করে দেয়ার মতো সুন্দর । যেই হাসি এক নাগারে বেশিক্ষণ সহ্য করা কঠিন বেপার । এরকম হাসি দেখলে শুধু যে বুকের বা পাশে চিনচিন ব্যাথা করে তা না । সেই ব্যথা বুকের ডান পাশ অবধি চলে আসে ।
ধীরে ধীরে গল্প বেশ ভালোই জমে উঠলো । কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো সেই হাসি । মেয়েটি একটু পর পর হাসছে আর আমাকে টেনশনে ফেলে দিচ্ছে । কারণ যখনই মেয়েটা হাসছে আমার সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে । কী নিয়ে কথা বলছিলাম মনে থাকছে না । ভাবনায় ছেদ পরলে যা হয় । ভালো সমস্যায় পরা গেল ।
মেয়েটা বলল-“ তা আপনি যাচ্ছেন কোথায়?”
-“ এখনও ঠিক করিনি । কোন একটা স্টেশন পছন্দ হলে নেমে যাব ।”
-“ আপনি এমন ভাবে কথা বলছেন মনে হচ্ছে আপনি মস্ত বড় একজন কবি-সাহিত্যিক ।”
-“ মস্ত বড় কিনা জানি না । কিন্তু আমি লেখালেখি করি ।”
-“ তাই? আপনাকে তো চিনি না । নাম কী আপনার?”
-“ হুমায়ুন আহমেদ”
-“ আজব । মিথ্যা বলছেন কেন?”
-“ আপনার নাম হুমায়ুন আহমেদ হতে যাবে কেন? উনি কত বড় একজন লেখক ।”
-“ হ্যাঁ, উনি অনেক বড় একজন লেখক । তাই বলে কি আর কারও নাম হুমায়ুন আহমেদ হতে পারে না?”-“ আপনার নাম সত্যি হুমায়ুন আহমেদ?”
. -“ হ্যা আমার নাম হুমায়ুন আহমেদ । আমার সাথে ভোটার আইডি কার্ড আছে । আপনি চাইলে দেখাতে পারি ।”
-“ না না থাক । দেখাতে হবে না । আ’ম সরি ।”
-“ আমার মা হুমায়ুন স্যারের লেখা খুবই পছন্দ করেন । তাই আমার নামও উনার নামে রেখেছেন ।”
এমন সময় হঠাৎ দমকা বাতাস এলো । বসন্তের মাতাল করা বাতাস নয় । বর্ষার ভীজে বাতাস । মেয়েটার একপাশের চুল বাতাসে উড়ে মুখ ঢেকে ফেলেছে ।
অন্যরকম একটি অবয়ব । ইচ্ছে করছে হাত দিয়ে চুল সরিয়ে দিতে । সেটি সম্ভব না । আমি বললাম-“ বাতাসে কারো টিপ খুলে যায় দেখি নি । আপনার কপালের টিপ কিন্তু এক পাশে সরে গেছে ।”
মেয়েটা টিপ দেখার জন্য কপালে হাত দিয়েছে । পুরো কপাল হাতরে টিপ খুজে পাওয়া গেল না ।
আমি হেসে ফেললাম ।
মেয়েটা মিছেমিছি রাগের ভান করে বলল-“ আপনি তো ভালই পাজি । আমি আজ টিপই পরি নি । কিন্তু এমন ভাবে বললেন বিশ্বাস করে ফেললাম ।”
এমন সময় বৃষ্টি শুরু হলো । আকাশে মিষ্টি রোদ ছিলো । হঠাৎ করে এমন ভাবে বৃষ্টি নেমে যাবে বোঝা যায়নি । প্রকৃতির এমন খেয়ালিপনা দেখে মনে হল, আমাদের গল্প করার সময়টাকে স্মরণীয় করে রাখতেই যেন এই আয়োজন । আমি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছি । আজকের বৃষ্টিটা অন্যরকম । ভিজতে ইচ্ছে করছে ।
. -“ চা খাবেন? ট্রেনে উঠলেই আমার চায়ের নেশা হয় । তাই ফ্লাস্কে চা নিয়েই ট্রেনে উঠি ।”-মেয়েটার কথায় সম্বিৎ ফিরে পেলাম ।
বললাম-“ হ্যা খাব । চা আমি পারত পক্ষে খাই না । তবে ওই যে নিয়ম আছে সুন্দরি কেউ চায়ের অফার করলে না করতে নেই ।”
-“ হয়েছে । আপনি যে লেখক আর বোঝাতে হবে না । ক চামচ চিনি খান আপনি?”
-“ চিনি খাই না ।”
-“ একটু ওনা?এভাবে ভালো লাগবে?”
-“ এক কাজ করুন, চিনির বদলে আমার চায়ে দুই ফোটা বৃষ্টির জল দিয়ে দিন । আমি এভাবেই চা খাই ।”
. -“ সত্যি? দিবো?”
-“ সত্যি ।”
মেয়েটি আমার কাপে বৃষ্টির জল দিয়ে দিল । সাথে নিজের কাপেও নিল ।
-“ আপনার দেখাদেখি আমিও খাচ্ছি রেইন টি । কি অদ্ভুত ।”
আমি কিছু বললাম না । নিশ্চুপ চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি ।
মেয়েটা বলল-“ আচ্ছা শীতের সময় তো বৃষ্টি হয় না । তখন চা কীভাবে খান?”
-“ তখন তো আরও ভাল । দুই ফোটা বৃষ্টির বদলে এক ফোটা শিশির দিলেই হয় । তখন মনে হয় পৃথিবীতে এসেছি শীতের সকালে শিশির ছোয়া চা খাওয়ার জন্য ।”
মেয়েটা কিছুক্ষণ কথা বলল না । চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । চোখে চোখ পরতে আমি বললাম-“ কী হলো?”
মেয়েটা দ্রুত নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে বলল-“ আপনি কেমন মানুষ বলুনতো । আমি আপনার নাম জানলাম । অথচ আপনি একবারও আমার নাম জানতে চাইলেন না ।”
-“ ওহ হ্যা । আপনার নাম জানা হয়নি । কী নাম আপনার?”
-“ তিয়াশা, সুন্দর না নামটা?”
. -“ হ্যা, অনেক সুন্দর ।”
. -“ আচ্ছা লেখক সাহেব । আপনি কোথায় যাচ্ছেন বললেন না তো ।”
-“ ওই যে বললামতো কোন একটা স্টেশন পছন্দ হলেই নেমে যাব ।”
-“ এটা কোন কথা । মিথ্যা বলছেন আপনি ।”
-“ নাহ, তিশা, আমি মিথ্যা বলি না”
. -“ এই যে মিস্টার আমার নাম তিশা না, তিয়াশা ।”
. -“ সরি তিয়াশা ।”
-“ আচ্ছা আপনি হঠাৎ এমন চুপচাপ হয়ে গেলেন যে? কী হয়েছে?”
-“ কই না তো । কথা বলছি তো । তাছাড়া সুন্দরী মেয়েদের সাথে খুব বেশি গল্প করতেও নেই ।”
-“ ইশ, আপনার এই বোরিং ডায়ালগ বাদ দিন প্লিজ । আচ্ছা আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে?”
. -“ হঠাৎ এই প্রশ্ন?”
-“ আছে কিনা বলুন ।”
-“ নাহ । নেই ।”
-“ হুম, বুঝলাম । আপনি কিন্তু আমাকে আবার জিজ্ঞেস করবেন না যে আমার বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা । আপনি জিজ্ঞেস করলেও আমি কিন্তু বলবো না ।”
.- “ হাহাহা, আচ্ছা ঠিক আছে আমি জানতে চাচ্ছি না ।”
. মেয়েটি হয়তো ভেবেছিল আমি জিজ্ঞেস করবো তার কোন বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা । আমি জিজ্ঞেস করছি না দেখে মনে হল মন খারাপ হয়ে গেল মেয়েটার ।
এমন সময় আমি ব্যাগ নিয়ে উঠে দাড়ালাম । মেয়েটা বলল-“ কোথায় যাচ্ছেন?”
আমি বললাম-“ নেমে যাব । এই স্টেশনটা পছন্দ হয়েছে ।”
-“ বৃষ্টি হচ্ছে তো । ভীজে যাবেন । এখানে না নেমে অন্য কোন স্টেশনে নামলে হয় না?”
-“ জী না মেম । হয় না” মুচকি হেসে বললাম আমি ।
আর কোন কথা বললাম না । উঠে চলে এলাম । মেয়েটা অদ্ভুত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।‘ভাল থাকবেন, আবার হয়তো দেখা হবে’-এই জাতীয় কোন কথা হয়তো আশা করেছিল মেয়েটা । মেয়েটাকে বিভ্রান্তির মধ্যে রেখে আমি ট্রেন থেকে নেমে গেলাম । বৃষ্টির বেগ আরও বেড়েছে । আমার আসলে বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছিল অনেক আগে থেকেই । নামার সাথে সাথেই ভিজে গেলাম । বৃষ্টির ফোটা গুলো একটু একটু করে আমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছিলো ।
প্রকৃতির আহবানে আমি নেমে গেলাম ট্রেন থেকে কিন্তু অদৃশ্য কোন শক্তি যেনো আমার হাত ধরে টানছে ট্রেনে ফিরে যাওয়ার জন্য । কানের কাছে কে যেন বলছে মেয়েটার সাথে আরেক কাপ বৃষ্টির জল মেশানো চা খাওয়ার জন্য । সেই অদৃশ্য আকর্ষণ উপেক্ষা করেই আমাকে নামতে হলো । কোন দিকে যাব ঠিক করতে পারছি না । মেয়েটা জানালা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । এই বয়সী মেয়েরা খুব বেশি জেদি হয় ।
মেয়েটা আমাকে পেছন থেকে ডাকবে না । নিজের আবেগের কাছে হেরে যাবে না কখনোই । মনে মনে হয়তো আমাকে খুজবে কিন্তু পাবে না । বৃষ্টির বেগ বাড়ছে সাথে আদ্র বাতাস বাতাস । আমি চলে আসবো এমন সময় আমি অবাক মেয়েটার কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম । বৃষ্টি হচ্ছে এজন্য মেয়েটা জোরে ডেকে বলল-“ এই যে হুমায়ুন সাহেব । আপনি আমাকে আসল নামটা বলেননি । তাই না?”
.আমি ফিরে তাকালাম । এক টুকরো হাসি ছুড়ে দিলাম । সরি বলা টাইপ হাসি । কোন জবাব দিলাম না । ফিরে যাওয়ার সাহস আমার নেই । জগতটা রহস্যময় । জগতের সব রহস্যের ব্যাখ্যা থাকে না । মেয়েটা আমাকে নিয়ে একটু হলেও ভাববে । আমি নাহয় একটু খানি রহস্য হয়েই থাকলাম । সব রহস্যের সমাধান হয়ে গেলে প্রকৃতির সৌন্দর্য নষ্ট হবে । সেই অধিকার আমার নেই ।
বৃষ্টির মধ্যে সামনে এগুচ্ছি । চোখে মুখে বৃষ্টির ঝাট এসে লাগছে ।
বুকের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে যেই অনুভূতির সাথে আমার পরিচয় নেই । এমন সময় একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল । আমার বিস্ময় সীমাকে অতিক্রম করে আমাকে দ্বিতীয় বারের মতো ডাকলো মেয়েটা । আমার সব হিসেব নিকেশ এলোমেলো হয়ে গেলো মুহুর্তেই । এবারে আমাকে মেয়েটার কাছে ফিরে যেতে হবে ।
কেন যেতে হবে? কারণ সুন্দরী মেয়েরা দ্বিতীয় বার ডাকলে সাড়া দেয়ার নিয়ম আছে ।
.